Tuesday, January 19, 2016

লোগো ডিজাইন করতে গিয়ে কিছু ভুল আর তার সহজ কিছু সমাধান।

logo mistake

লোগো ডিজাইন। খুব জনপ্রিয় একটা মাধ্যম, যার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব আর সেই জন্যই অনেক ডিজাইনার এখন শুধু লোগো ডিজাইন করছে। কিন্তু আমরা অনেকই আছি লোগো ডিজাইন করতে গিয়ে অনেক সিম্পল মিস্টেক করি। হয়ত লোগোর গল্প ত আওনেক সুন্দর, ধারনাটা দারুন কিন্তু লোগো দেখতে প্রোফেসনাল লাগে না, বায়ার পছন্দ করে না, কাজ আপ্প্রুভ হয় না, আর যেহেতু টেকনিক্যাল প্রবলেম না তাই কেন বায়ার পছন্দ করছে না, কেন আপ্প্রুভ হচ্ছে না সেটা সব সময় বুঝা যায় না, যার ফলে হতাশা চলে আসে আর হতাশা নিয়ে অন্তত গ্রাফিক ডিজাইন করা যায় না। তাই আমি এখানে ৫ টা ভুল যেটা আমরা প্রায় করি সেগুলি নিয়ে কিছু লিখার চেষ্টা করছি।

অনেক বেশি ফন্ট ব্যবহার করা

অনেক বেশি ফন্ট ব্যবহার করা, আমরা হয়ত মনে করি অনেক বেশি ফন্ট ব্যবহার করলে লোগোতে ভেরিয়াশন আসবে। অন্যরকম লাগবে। এরকম মনে করার কোন কারন নেই। মনে রাখব লোগো যত সিম্পল করা যায় তত ভাল। তাই আমরা কম ফন্ট ব্যবহার করবো। যদি কারো আর্ট এর হাত ভাল থাকে তাহলে চেষ্টা করতে পারেন হ্যান্ড রাইটিং ফন্ট বানাতে তাহলে অনেক ভাল হয়, সবার থেকে একদম আলাদা হতে পারে আর বায়ার সেটা লুফে নিবে। সেরিফ ফন্টগুলো ব্যবহার করলে লোগো দেখতে খুব সিম্পল আর সুন্দর দেখায়। দুই একটা ফন্ট এর মধ্যে ডিজাইন করতে চেষ্টা করবো কিন্তু ৩ টা ফন্ট এর বেশি ব্যবহার করবো না। এইটা গ্রাফিক ডিজাইন এর বেসিক নিয়ম।

সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজাইন করার চেষ্টা করা

আর একটা ভুল হল আমরা সবসময় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজাইন করার চেষ্টা করি, সবাই যা করছে তাই বানাও এরকম কিছু। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজাইন করা অবশ্যই খারাপ কিছু না, অবশ্যই এইটা ভাল আমি বলিছিলাম সব সময় নয়। লোগো হউয়া উচিত টাইমলেস। লোগো এমন ভাবে লোগো বানাতে হবে যেন সেইটা যুগের সাথে সাথে পাল্টাতে না হয়। যত দিন ই যাক সেটা যেন সেই যুগের সাথে মিলে যায়। BBC এর লোগো দেখি আমরা অনেক আগের লোগো, এখনও কিন্তু তারা সেটা পাল্টায় নি। নাইক কোম্পানির লোগো দেখি, কত আগের লোগো কিন্তু এখনও ওইভাবে ই ফেমাস। যারা ভাল লোগো ডিজাইন এর উপর লেখা লেখে তারা মোটামুটি সবাই নাইক এর লোগোকে উদাহারন হিসেবে ব্যবহার করে। তাই শুধু যুগের সাথে তাল রেখে না, যুগ পরিবর্তন হলে ও যেন লোগো আধুনিক থাকে সেইভাবে চিন্তা করতে হবে।

ডিজাইন করতে গিয়ে অনেক বেশি জটিল করে ফেলা

আর একটা প্রবলেম হল আমরা লোগো ডিজাইন করতে গিয়ে অনেক বেশি জটিল করে ফেলি। জটিল ধরনের শেপ, সেই জটিল ধরনের শেপ এর মধ্যে কোন গল্প ফুটিয়ে তোলা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমরা হয়ত ভাবছি যত জটিল ডিজাইন হবে বায়ার ততো পছন্দ করবে, ব্যাপারটা আসলে এরকম না। আপনি যত সিম্পল ডিজাইন রাখতে পারবেন আর সিম্পল ডিজাইন এর মধ্যে আপনি যদি সম্পর্কিত কোন গল্প ফুটিয়ে তুলতে পারেন তাহলে অনেক ভাল হয়। আমাজন এর লোগো কত সিম্পল কিন্তু কত সুন্দর একটা গল্প। Fedex এর লোগো তো শুধু টেক্সট লোগো কিন্তু ভাল করে লক্ষ্য করেন দেখবেন সেটার একটা মিনিং খুজে পাবেন। আর একটা ব্যাপার মনে রাখবেন জটিল ডিজাইন, বিস্তারিত ডিজাইন বড় কোন জায়গায় দেখতে ভাল লাগে, আপনি যখন আপনার লোগোকে ছোট করবেন ডিজাইনটা বুঝা যাবে না, দেখতে খারাপ লাগবে। আর লোগো ডিজাইন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে সেই লোগো যেন যে কোন সাইজে এ ফিট করে।

অদক্ষ ডিজাইনারদের দিয়ে ডিজাইন করানো

যারা লোগো ডিজাইন করান তারা তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে এবং সস্তায় অনেক সময় বিনা পয়সায় করতে গিয়ে একদম অদক্ষ ডিজাইনারদের দিয়ে ডিজাইন করান যারা হয়ত গ্রাফিক ডিজাইন ঠিক মতো শিখাই সেস করে নাই। আর যে গ্রাফিক ডিজাইন শিখা সেস করে নাই তার জন্য অন্তত লোগো ডিজাইন করা খুব সহজ না, ভুল করাটাই স্বাভাবিক। তাই পয়শা বাঁচাতে গিয়ে আমরা কুয়ালিটি এর সাথে সমঝতা না করি।

রাস্টার ইমেজ ব্যবহার করা

অনেক লোগোতে দেখা যায় সেখানে রাস্টার ইমেজ ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ যে ইমেজ পিক্সেল দিয়ে তৈরি হয়, যেগুলিকে বড় করলে কুয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায় ছবির। সমস্যাটা কোথায় হবে, আপনি প্রথমবার ছোট করে বানালেন কারন আপনার তখন ছোট ই দরকার। কিন্তু কিছুদিন পর আপনি সেই লোগোকে আরও বড় জায়গায় প্রিন্ট করবেন, ধরুন বিলবোর্ড এ তখন তো আপনার লোগোকে বড় করতে হবে আর সেটা যখন আপনি করতে যাবেন আপনার লোগোর কুয়ালিটি নষ্ট হয়ে যাবে তাই লোগো ডিজাইন করতে আমারা শেপ ব্যবহার করি, গুগল থেকে কোন ছবি দিয়ে লোগো না বানাই। আমরা Adobe Illustrator অথবা Corel draw এই সফটওয়্যারগুলি ব্যবহার করতে পারি, এগুলি গানিতিক ভাবে শেপগুলি তৈরি করে তাই আপনি যখন বড় করবেন লোগোর কুয়ালিটি নষ্ট হবে না

শুধু নিজের কথা চিন্তা করে ডিজাইন করা

ডিজাইনাররা অনেক সময় নিজের কথা চিন্তা করে বায়ার এর কথা না ভেবে। কিরকম? দেখা গেল একজন একটা ফন্ট খুজে পেয়েছে, তার কাছে খুব দারুন মনে হচ্ছে। তখন সে করে কি সেই ফন্ট টা কখন ব্যবহার করবে সেটার জন্য অস্থির হয়ে যায়, দেখা যায় যেখানে সেই ফন্ট একদমই যায় না সেখানে সেই ফন্ট ব্যবহার করে বসে থাকে, যেটা একদন ভুল একটা সিদ্ধান্ত। আপনি চিন্তা করেন একটা অনেক সুন্দর মডার্ন একটা ফন্ট সেটা হয়ত কোন সিরিয়াস বিজনেস যেমন Lawyer’s office এর লোগো সাথে হয়ত যায় না।

অতিরিক্ত কালার ব্যবহার করা

লোগো বানাতে বসলে তো আমরা চিন্তায় পড়ে যাই কয়টা কালার ব্যবহার করবো। সেরকম না আসলে লোগোতে কালার খুব সিম্পল কালার এবং খুব কম কালার ব্যবহার করা উচিত। মনে রাখতে হবে আপনি ভাল ডিজাইন সেটা প্রমান করার জন্য অনেক কালার এনে একটা ডিজাইন করা জরুরি না, আপনি ভাল ডিজাইনার তখন ই প্রমান হবে যখন আপনি কালার নির্বাচন করবেন সবার শেষে, আপনি প্রথমে সাদাকাল ডিজাইন করেন, এরপর কালার এর কথা চিন্তা করেন। অনেক সময় বায়াররা তাদের লোগো কে একটি কালার এ ডিসপ্লে করাতে চায়, আর জব পোস্টগুলি পরেন আমি দেখি নাই বায়াররা বলছে অনেক কালারফুল লোগো বানাতে হবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ই দেখা যায় সিম্পল ডিজাইন এর কথা বলা হচ্ছে।

ডিজাইন কপি করা

অনেকেই অন্য ডিজাইন কপি করে চালিয়ে দিতে চান, এবং এরকম লোগোর পরিমান দিনে দিনে বাড়ছে, মনে করেন একটু পরিবর্তন করে দিলে আর কেউ ধরতে পারবে না। লোগো বানাতে আইডিয়া লাগে আর আইডিয়া এতো কোথায় পাব এরকম একটা ব্যাপার। লোগো ডিজাইন একটা বিজনেসকে রিপ্রেসেন্ট করে তাই সেই কোম্পানির ডিজাইন যদি অন্য কোন কোম্পানির মতো হয় তাহলে কেমন হয়?

ফাইবার এ সুপার ৩টা প্যাকেজ, ভুলে যান ৫ ডলার এর কাজের কথা

No comments:
Write comments

Categories