Thursday, February 4, 2016

কিভাবে কাজ করবেন আপওয়ার্কে ( পর্ব- ১)


কিভাবে কাজ করবেন আপওয়ার্কে।আশা করছি নতুনদের  জন্য কাজ পেতে অনেক সাহায্য করবে।আপওয়ার্ক যেটা আগের নাম ছিল ওডেস্ক। এখনও হয়ত আমরা অনেকেই ওডেস্ক এ বলি, যেটাই হোক এটি বাংলাদেশের মধ্যে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস। এখানে অনেকেই আছে অনেক দিন ধরে কাজ করে, কিছু আছে নতুন। তাদের মধ্যে কিছু বুঝে আসছে কিছু একদম এ কিছু না বুঝে, যারা বুঝে আসছে না তারা শুধু ভাবছে ঘর এ বসে ইনকাম করা যায়, তাহলে টো ভালই, ঘর এ বসে সহজে ইনকাম করবো। সব ই ঠিক আছে কিন্তু “সহজে” এই কথাটা শুধু ঠিক নাই। অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলিতে সহজে ইনকাম করার কোন বাবস্থা নাই। আপনাকে ইনকাম করতে হলে একটা বিষয়ে দক্ষ হতে হবে দক্ষ না হলে অন্তত ভাল মত জানতে হবে তারপর আপনি কাজ করতে পারেন। আমি পয়েন্ট আকারে কিছু টিপস দিয়ে দিচ্ছি।

প্রস্তুতি

আপনি আপওয়ার্ক এ একাউন্ট করার আগেই ঠিক করুন আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, গ্রাফিক ডিজাইন, নাকি ওয়েব পেজ ডিজাইন, নাকে মার্কেটিং অথবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। যে কোন একটি বিষয় ঠিক করুন, ঠিক মত প্রশিক্ষন নিন, ভাল মত জানুন, নিজে নিজে অনুশীলন করুন। এখানে কোন তাড়াতাড়ি বাবস্থা নেই। আর আপনি যদি তাড়াতাড়ি করতে চান তাহলে দেখা যাবে আপনি কাজ পাবেন না, হতাশ হয়ে যাবেন তারপর আপনারটা দেখে অন্যরাও হতাশ হবে। একটি বিষয় বললাম কারন আপনার বায়ার যখন আপনার প্রোফাইল এ বিভিন্ন বিষয় দেখবে সে নিজে দ্বিধায় পরে যাবে যে আপনি তার কাজটি ঠিক মতো করতে পারবেন কিনা।

একাউন্ট খুলুন

আপনি যখন মোটামুটি প্রস্তুত একাউন্ট করে ফেলুন। অনেকগুলি একাউন্ট করতে যাবেন না একটা একাউন্ট ই যথেষ্ট। একাউন্ট হয়ে গেলে আপনাকে প্রোফাইল সাঁজাতে হবে যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রোফাইল সাঁজাতে গিয়ে কিছু ব্যাপার লক্ষ্য রাখতে হবে।

১০০% করুন আপনার প্রোফাইল

আপনি যখন আপনার প্রোফাইল সাজাবেন তখন স্টেপ ব্য স্টেপ আপওয়ার্ক আপনার প্রোফাইল কত ভাগ কমপ্লিট হল সেটা দেখাবে। সে জন্য আপনাকে চাকুরীর অভিজ্ঞতা, আপনার প্রোফাইল এ ছবি দেয়া ইত্যাদি কাজগুলো কমপ্লিট করতে হবে, চেষ্টা করবেন কোন ঘরকে ফাঁকা না রেখে সেখানে ইনফর্মেশন দেয়ার জন্য তবে অবশ্যই ফেক ইনফর্মেশন না। আপনি যখন এগুলি শেষ করলেন তখন ও আপনার ১০০% কমপ্লিট হতে ১৫% এর মতো বাকি থাকবে, সেটা কমপ্লিট করতে হবে স্কিল টেস্ট এর মাধ্যমে। আপনি আপনার কাজের বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত টেস্টগুলি দিন। দুই একটায় পাশ করে গেলেই আপানর প্রোফাইল ১০০% এ চলে যাবে। এ ছাড়া ও স্কিল টেস্ট এর ফলাফল দেখে বায়ার আপনাকে যোগ্য মনে করবে। টেস্ট এর ফলাফল ১০% অথবা ২০% হলে আপনি সেটা আপানর প্রোফাইল এ শো করেন, নতুন হলে ৩০% ও শো করতে পারেন তবে গড়ের নিচের রেসুলত প্রোফাইল এ শো না করাই ভাল। আপনি টেস্ট এ ভাল না করতে পারলে ১ মাস পর আবার সেই টেস্ট দিতে পারবেন।

সুন্দর টাইটাল

প্রথমেই যে ব্যাপারটা সেটি হল আপনার টাইটাল। শুন্দর একটি টাইটাল দিন, ছোট একটি টাইটাল দিন, অনেকে একসাথে অনেক কিছু লিখে দিতে ছায় যেমন ” Photo editor,Logo designer,Print design” এরকম ভাবে অনেক কিছু টাইটাল এ দেয়ার দরকার নেই সে জন্য আপনার ওভারভিউ বক্স আছে। তাই এক লাইন এ ছোট করে টাইটাল দিন যেমন ” Professional Graphic designer” অথবা “logo design expert”

নির্বাচন করুন একটি বিষয়

গ্রাফিক ডিজাইন যদি করতে চান তাহলে একটা কথা বলব যেইটা অন্তত আপওয়ার্ক এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইনার এর মধ্যে কয়েকটা বিষয় আছে যেমন লোগো ডিজাইন, প্রিন্ট ডিজাইন, ওয়েব লেআউট ডিজাইন, ইন্টারফেছ ডিজাইন, ফটো এডিটিং এরকম, আপনি এগুলির মধ্যে যে কোন একটি বেঁছে নিন এবং সেতার উপর কাজ শুরু করুন, আপনি যখন আপনার প্রোফাইল এ অনেক কিছু এক সাথে দিবেন বায়ার ভাববে আপনি কোন কিছুতেই এক্সপার্ট না। আর সেটা ভাবাই স্বাভাবিক কারন এতো কিছু একসাথে করতে গেলে কোন বিষয়ে এক্সপার্ট হউয়া খুব সহজ না।

সুন্দর করে লিখুন ওভারভিউ

খুব সুন্দর করে গুছিয়ে ওভারভিউ লিখুন। আপনি কতদিন যাবত কাজ করছেন, কি কি কাজ করছেন, আপনি কিভাবে কাজ করেন, আপনার চিন্তা করার ধরনটা কি। আইডিয়া তৈরি করতে আপনি কিরকম এক্সপার্ট। আপনার কমিনিকেশন কেমন অর্থাৎ বায়ার যোগাযোগ করলে আপনার উত্তর দিতে গড়ে কত সময় লাগে এইসব সাজিয়ে লিখুন। আপনি তাকে কি কি সার্ভিস দিতে চান সেগুলি ও বলতে পারেন যেমন আনলিমিটেড রিভিশন, মানি ব্যাক অফার ইত্যাদি।

যা লিখবেন বুঝে লিখুন

যা লিখবেন বুঝে লিখবেন, যে সার্ভিস দিবেন বুঝে দিবেন, আপনার লেখা দেখে আপানর বায়ার আপনাকে কাজ দিল কিন্তু আপনি হয়ত পারবেন না সেটা নিজে ও জানেন কিন্তু বায়ার পাওয়ার জন্য কিছু বানিয়ে বানিয়ে লিখেছেন। এখন কি করবেন। কাজ দিতে পারবেন না, বায়ার ভাল রিভিউ দিবে না, দেখা যাবে একটা ঘটনার জন্য আপনি আর কাজ ই পাচ্ছেন না। তাই কি লিখছেন, কি অফার দিচ্ছেন সেটা এক্তু বুঝে দিবেন।

আউরলি রেট

আপনি যখন প্রফাইল সাজাবেন আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আউরলি রেট। আপনি এক ঘণ্টা কাজ এর বিনিময়ে বায়ার এর কাছে কত চান। এখানে অনেকেই মনে করছেন যেহেতু নতুন একদম কম দিয়ে শুরু করবেন যেমন $3-$5, আপনি যখন এই রেট দিবেন তখন বায়ার এরকম চিন্তা করতে পারে যে এই ডিজাইনার কাজ খুব ভাল পারে না তাই তার ডিমান্ড এতো কম আর আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভবনা ও কমে যাবে। শুরু করুন কমপক্ষে $6 থেকে অথবা আপনার স্কিল অনুযায়ী আরও বেশি থেকে। প্রথমেই নিজের ডিমান্ড কমানো ঠিক হবে না বলে আমার ধারনা।

প্রোফাইলে ছবি

১০. প্রোফাইল এ আপনার ছবি দিবেন। ছবি অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে, এঙ্গেল হউয়া যাবে না, তাতে আপানার চেহারা বুযা না গেলে ছবি গ্রহন হউয়ার সম্ভবনা কম। একদম পাসপোর্ট এ যে ভাবে ছবি তুলেন সেরকম ও দরকার নেই। খুব সুন্দর একটি হাসি দিয়ে ছবি তুলে ফেলুন।

ক্যাটাগরি

ক্যাটাগরি তে আপনি কোন ক্যাটাগরি তে কাজ করবেন সেগুলি দিবেন, আপনার বিষয়ের সাথে মিলে না এরকম কিছু দিবেন না। ক্যাটাগরি এর উপর নিরভর করে আপনার হোম পেজ এ জব এর লিস্ট আসবে।

স্কিল যোগ করুন

প্রোফাইল এ আপনার স্কিল যোগ করবেন। আপনি কি কি কাজ পারেন, কোন কোন সফটওয়্যার এ দিয়ে কাজ করেন এগুলি দিয়ে দিবেন, এগুলি দেয়ার জন্য আলাদা স্কিল বক্স আছে সেখানে গিয়ে লিখে দিবেন।

আপনার পোর্টফলিও

খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পোর্টফলিও সাজানো, বায়ার পোর্টফলিও না পেলে আপনাকে কাজ দিবে না এটা ধরে রাখাই ভাল। পোর্টফলিও তে আপনি আপনার বিগত দিনের কাজগুলি জমা করবেন। আপনার সেরা কাজগুলি সাবমিট করবেন। আপনি যদি কোন কাজ করে না থাকেন তাহলে এখন কাজ বানানো শুরু করে দিন। এখানে কুয়ালিটি নিয়ে কিছু বলতে হচ্ছে। মনে রাখবেন আপনি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম এ কাজ করছেন, এখানে আপনার কম্পিটিটর সারা পৃথিবী তাই আপনাকে কিন্তু অনেক বেশি চিন্তা করতে হবে একটা ডিজাইন নিয়ে। গতানুগতিক ডিজাইন থেকে সরে আসতে হবে। নতুন কিছু চিন্তা করতে হবে, দেখতে হবে বাইরের ডিজাইনাররা কি ভাবে ডিজাইন করছে। অথবা বাংলাদেশ ই এখন অনেক ছেলে মেয়ে আন্তর্জাতিক মানের কাজ করছে তাদের দেসিগ্ন,তাদের প্রোফাইল দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
খুব শিগ্রই ২য় পার্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব।
ততক্ষন ভাল থাকবেন।
ধন্যবাদ

No comments:
Write comments

Categories